কুফুরের পরিণতি

মূল: জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা…………

কুফুরের পরিণতি ও শাস্তি নামে এটি একটি মূল্যবান প্রবন্ধ যাতে কুফুর বা আল্লাহকে অস্বীকার করার কিছু পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ভূমিকা

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, তাঁর কাছে সাহায্য চাই, তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহর নিকট আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্টতা ও আমাদের কর্মসমূহের খারাপ পরিণতি থেকে আশ্রয় কামনা করি। আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন, তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হিদায়াত দেওয়ারও কেউ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সালাত ও সালাম নাযিল হোক তাঁর ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন ও তাঁর সাহাবীগণের ওপর এবং যারা কিয়ামত অবধি ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করেন তাদের ওপর।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোনো উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন।

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের সৃষ্টি করার পর, তাঁর প্রতি বিশ্বাস করা ও ঈমান আনার নির্দেশ দেন। যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনে তাদের জন্য তিনি নির্ধারণ করছেন অসংখ্য নি‘আমত ও জান্নাত। আর যারা তাকে অস্বীকার করে বা তার সাথে কুফুরী করে তার জন্য রয়েছে অত্যন্ত কঠিন পরিণতি ও শাস্তি। তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে তা ভোগ করবে। এ বইটিতে আমরা কুফুরের কিছু পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা এই যে, আল্লাহ যেন আমাদের আল্লাহর সাথে কুফুরী করা থেকে হিফাযত করেন। আল্লাহ প্রতি চির বিশ্বাসী হওয়ার তাওফীক দান করেন। আমীন।

কুফুরের পরিণতি

যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে না আল্লাহর দীনকে স্বীকার করে না, তারাই কাফির মুশরিক। তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতের দুর্ভোগ এবং অনন্ত অসীম শাস্তি। এ কথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, ইসলামই হচ্ছে আল্লাহর মনোনীত দীন বা সার্বজনীন ধর্ম। আর তা সত্য দীন এবং এমন দীন যা নিয়ে সমস্ত নবী ও রাসূলগণ আগমন করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, তিনি তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে মহান প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন এবং যে তাঁর কুফুরী করে, তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাদের জন্যই সুসংবাদ দুনিয়াবী এবং আখিরাতে। আল্লাহর বাণীসমূহের কোনো পরিবর্তন নেই। এটিই মহা সফলতা”।
[সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬৩-৬৪] 

আর যেহেতু আল্লাহ বিশ্বজগতের স্রষ্টা, অধিপতি ও কর্তৃত্বকারী, আর আপনি মানুষ হলেন তাঁর একটি সৃষ্ট জীব। তাই তিনি আপনাকে সৃষ্টি করেন এবং বিশ্বজগতের অনেক কিছুকে আপনার অনুগত করেন, আপনার জন্য তাঁর বিধান রচনা করেন ও আপনাকে তাঁর আনুগত্য করার আদেশ দেন। সুতরাং আপনি যদি তাঁর ওপর বিশ্বাস আনেন এবং তিনি আপনাকে যা আদেশ করেছেন তা পালন করেন, আর তিনি আপনাকে যা থেকে নিষেধ করেছেন তা বর্জন করেন, তাহলে আল্লাহ আপনার সাথে আখিরাত দিবসে যে স্থায়ী নি‘আমতের ওয়াদা করেছেন তা লাভ করবেন। দুনিয়াতে যেসব বিভিন্ন প্রকার নি‘আমত আপনাকে দান করেছেন তা অর্জন করবেন। আর জ্ঞানের দিক দিয়ে যার সৃষ্টি পরিপূর্ণ এবং যাদের অন্তর অধিক পবিত্র যেমন; নবী, রাসূল, নেককার, ও সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ফিরিশতামণ্ডলী, আপনি তাদের মত হলেন। আর যদি আপনার প্রভুর কুফুরী করেন ও অবাধ্য হন, তাহলে তো আপনি আপনার দুনিয়া ও আখিরাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে আপনি তাঁর ঘৃণা ও আযাবকে গ্রহণ করলেন। আল্লাহ বলেন, 

“তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে, আর তারা হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না”।
[সূরা ইউনুস, আয়াত: ৪৫] 

আর আপনি সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি এবং যাদের জ্ঞান সব চেয়ে কম ও যাদের অন্তর সব চেয়ে নিম্নতর যেমন, শয়তান, অত্যাচারী, ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী ও তাগুত, তাদের মত হলেন। এগুলো সংক্ষিপ্তাকারে মাত্র। নিম্নে বিস্তৃতভাবে কুফুরীর কিছু পরিণাম উপস্থাপন করলাম যথা:

(১) ভয়-ভীতি ও অশান্তি: 

যারা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস আনে এবং তাঁর রাসূলগণের আনুগত্য করে, তাদেরকে তিনি পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে পূর্ণ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“প্রকৃতপক্ষে তারাই শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী, যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের স্বীয় ঈমানকে যুলুমের সাথে (শির্কের সাথে) সংমিশ্রিত করে নি, আর তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত”।
[সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৮২] 

আর আল্লাহ হলেন নিরাপত্তা দানকারী, তত্বাবধায়ক এবং বিশ্বজগতে যা রয়েছে তার সব কিছুর অধিপতি। সুতরাং তিনি যদি কোনো বান্দাকে তাঁর ওপর ঈমানের কারণে ভালোবাসেন, তাহলে তিনি তাকে নিরাপত্তা, প্রশান্তি ও স্থিরতা প্রদান করেন। আর মানুষ যদি তাঁর সাথে কুফুরী করে, তাহলে তিনি তার নিরাপত্তা ও শান্তি ছিনিয়ে নেন। সুতরাং আপনি তাকে দেখবেন, সে আখিরাত দিবসে তার পরিণাম সম্পর্কে সর্বদা ভীত অবস্থায় আছে। আর সে তার নিজের ওপর বিভিন্ন ধরণের বিপদ-আপদ ও রোগ ব্যাধি এবং দুনিয়াতে তার ভবিষ্যতের ব্যাপারেও ভীত। আর এই নিরাপত্তাহীনতা এবং আল্লাহর ওপর বিশ্বাস না থাকার কারণেই আজ গোটা বিশ্বে জান ও মালের ওপর বীমা তথা ইনস্যুরেন্সের মার্কেট গড়ে উঠেছে। 

(২) সংকীর্ণ জীবন: 

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেন এবং পৃথিবীর সব কিছুকে তার অনুগত করে দেন। আর তিনি প্রত্যেকটি মাখলুককে তার অংশ তথা রিযিক ও বয়স বণ্টন করে দেন। তাইতো আপনি দেখতে পান, পাখি তার রিজিকের খোঁজে সকাল বেলা বাসা হতে বেরিয়ে যায় এবং রুযী আহরণ করে। এ ডালে ওডালে ছুটাছুটি করে এবং মিষ্টি সূরে গান গায়। আর মানুষও এক সৃষ্ট জীব যাদের রিযিক ও বয়স বণ্টন করা হয়েছে। সুতরাং সে যদি তার রবের ওপর ঈমান আনে এবং তাঁর শরী‘আতের ওপর অটল থাকে, তাহলে তিনি তাকে সুখ ও প্রশান্তি দান করবেন এবং তার যাবতীয় কাজকে সহজ করে দিবেন। যদিও তা জীবন গড়ার সামান্য কিছু হোক না কেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমরা অবশ্যই আসমান ও যমীন থেকে বরকতসমূহ তাদের ওপর খুলে দিতাম; কিন্তু তারা অস্বীকার করল। অতঃপর তারা যা অর্জন করত তার কারণে আমরা তাদেরকে পাকড়াও করলাম”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৯৫] 

পক্ষান্তরে সে যদি তার প্রভুর সাথে কুফুরী করে এবং তাঁর ইবাদত করা থেকে অহংকার প্রদর্শন করে, তাহলে তিনি তার জীবনকে কঠিন ও সংকীর্ণ করে দিবেন এবং তার ওপর চিন্তা ও বিষণ্ণতা একত্রে জড়িয়ে দিবেন। যদিও সে আরাম আয়েশের সকল উপকরণ এবং ভোগ সামগ্রীর বিভিন্ন প্রকার জিনিসের মালিক হয় না কেন। আপনি কি ঐ সমস্ত দেশে আত্মহত্যাকারীর আধিক্য লক্ষ্য করেন নি, যারা তাদের জনগণের বিলাসিতার সমস্ত উপকরণের দায়িত্ব নিয়েছে? এবং তাদের পার্থিব জীবনের দ্বারা আনন্দ উপভোগ করার জন্য আপনি কি বিভিন্ন ধরণের অভিজাত আসবাবপত্র ও চিত্ত বিনোদনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে অপচয় লক্ষ্য করেন নি? আর এ ব্যাপারে অপচয়ের দিকে যে জিনিসটি ধাবিত করে তা হলো, ঈমান বা বিশ্বাস শূন্য অন্তর, সঙ্কীর্ণতা অনুভব এবং এ সব সংকীর্ণতাকে পরিবর্তনকারী ও নতুন কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে এই মনোকষ্টকে দূর করার প্রচেষ্টা করা। আর আল্লাহ তা‘আলা তো সত্যই বলেছেন, 

“আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করবো অন্ধ অবস্থায়।” [সূরা ত্বা–হা, আয়াত: ১২৪] 

(৩) সংঘাতময় জীবন: 

 যে কুফুরী করে, সে তার আত্মা এবং সৃষ্টি-জগতের যা তার চতুঃপার্শ্বে তার সাথে সংঘাতের মধ্যে জীবনযাপন করে। কারণ, তার আত্মাকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাওহীদ তথা একত্ববাদের ওপর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“আল্লাহর প্রকৃতি, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন।”
[সূরা আর-রূম, আয়াত: ৩০] 

আর তার শরীর তার প্রতিপালকের জন্য আত্মসমর্পণ করে এবং তার নিয়মে চলে। কিন্তু কাফের তার সৃষ্টি তথা প্রকৃতির বিরোধিতা করে এবং সে তার স্বেচ্ছামুলক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে তার প্রভুর আদেশের বিপক্ষ হয়ে বেঁচে থাকে। ফলে তার শরীর আত্মসমর্পণকারী হলেও তার পছন্দ হয় বিপক্ষ। সে তার চারপাশের সৃষ্টি জগতের সাথে সংঘাতের মধ্যে রয়েছে। কারণ, এই বিশ্বজগতের সব চেয়ে বড় থেকে আরম্ভ করে সব চেয়ে ছোট কীট-পতঙ্গ পর্যন্ত সব কিছু ঐ নীতি নির্ধারণের ওপর চলে, যা তাদের প্রতিপালক তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,  

“অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিল ধূম্র বিশেষ। তারপর তিনি এটাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে এসো (আমার বশ্যতা স্বীকার কর) ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা অনুগত হয়ে আসলাম”।
[সূরা ফুস্সিলাত, আয়াত: ১১] 

বরং এই বিশ্বজগত ঐ ব্যক্তিকে পছন্দ করে যে আল্লাহর জন্য আত্মসমর্পণ করার ক্ষেত্রে তার সাথে মিলে যায় এবং যে তার বিরোধিতা করে তাকে সে অপছন্দ করে। আর কাফের তো হলো এই সৃষ্টি জগতের মাঝে অবাধ্য, যেহেতু সে নিজেকে প্রকাশ্যভাবে তা প্রভুর বিরোধী হিসাবে দাঁড় করিয়েছে। এ জন্য ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল এবং সমস্ত সৃষ্টিকুলের জন্য; তাকে, তার কুফুরীকে এবং তার নাস্তিকতাকে ঘৃণা করা আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“আর তারা বলে, দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এক বীভৎস কথার অবতারণা করেছ। এতে যে আকাশসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং পর্বতসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে। যেহেতু তারা দয়াময় আল্লাহর ওপর সন্তান আরোপ করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর জন্য শোভনীয় নয়। আকাশসমুহে এবং পৃথিবীতে যারাই রয়েছে তারা সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে বান্দা হিসেবে”। [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৮৮-৯৩] 

মহান আল্লাহ ফির‘আউন এবং তার সৈন্যদল সম্পর্কে বলেন,

“আকাশ এবং পৃথিবী কেউই তাদের জন্যে অশ্রুপাত করে নি এবং তাদেরকে অবকাশও দেওয়া হয় নি।”
[সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ২৯] 

(৪) মূর্খ হয়ে বেঁচে থাকা: 

যেহেতু কুফুর বা অবিশ্বাস হলো মূর্খতা, বরং তা বড় মূর্খতা। কারণ, কাফের তার প্রভু সম্পর্কে অজ্ঞ। সে এই বিশ্বজগৎকে দেখে; এটাকে তার প্রভু চমৎকারভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং সে নিজেকে দেখে যা এক মহান কাজ ও গৌরবময় গঠন। তারপরও সে এ বিষয়ে অজ্ঞ যে, এই বিশ্বজগতকে কে সৃষ্টি করেছেন এবং কে তাকে গঠন করেছেন, এটা কি সব চেয়ে বড় মূর্খতা নয়? 

(৫) যালিম হিসেবে বেঁচে থাকা: 

একজন কাফের তার নিজের প্রতি এবং যারা তার চারপাশে রয়েছে তাদের প্রতি যুলুমকারী হিসাবে জীবন যাপন করে। কারণ, সে নিজেকে এমন কাজে নিয়োজিত করে, যে জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়নি। সে তার প্রভুর ইবাদত না করে বরং অন্যের ইবাদত করে। আর যুলুম হচ্ছে কোনো বস্তুকে তার নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে অন্য জায়গায় রাখা। আর ইবাদতকে তার প্রকৃত হকদার ব্যতীত অন্যের দিকে ফিরানোর চেয়ে বেশি বড় যুলুম আর কী হতে পারে। লোকমান হাকিম পরিষ্কারভাবে শির্কের নিকৃষ্টতা বর্ণনা করে বলেন,

“হে বৎস! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয় শির্ক হচ্ছে বড় যুলুম।”
[সূরা লোকমান, আয়াত: ১৩] 

সে তার চারপাশের মানুষ ও সৃষ্টিকুলের প্রতি যুলুম করে। কারণ, সে প্রকৃত হকদারের হককে অবহিত করে না। ফলে কিয়ামত দিবসে মানুষ অথবা জীব-জন্তু যাদের প্রতিই সে যুলুম করেছে, তারা সবাই তার সামনে এসে দাঁড়াবে এবং তার প্রতিপালকের কাছে তার নিকট থেকে তাদের প্রতিশোধ নেওয়ার আবেদন করবে। 

(৬) দুনিয়াতে আল্লাহর ঘৃণা ও গজবের সম্মুখীন হয়: 

সুতরাং দ্রুত শাস্তিস্বরূপ সে বালা-মুসিবত ও দুর্যোগ অবতীর্ণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“যারা কু-কর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নিশ্চিত আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা এমন দিক থেকে শাস্তি আসবে না যা তাদের ধারণাতীত? অথবা চলাফেরা করা অবস্থায় তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন না? তার তো এটা ব্যর্থ করতে পারবে না। অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় ধৃত করবেন না? তোমাদের রব তো অবশ্যই অনুগ্রহশীল, পরম দয়ালু।”
[সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৪৫-৪৭] 

তিনি আরও বলেন,

“যারা কুফুরী করেছে তাদের কর্মফলের জন্যে তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে অথবা বিপর্যয় তাদের আশে পাশে আপতিত হতেই থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি আসবে, নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ৩১] 

মহান আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

“অথবা জনপদবাসীরা কি এই ভয় করে না যে, আমার শাস্তি তাদের ওপর এমন সময় এসে পড়বে যখন তারা পূর্বাহ্নে আমোদ-প্রমোদে রত থাকবে?” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৯৮] 

এমন যারাই আল্লাহর যিকির বা স্মরণকে বিমুখ করে তাদের প্রত্যেকের এ অবস্থা। আল্লাহ তা‘আলা বিগত কাফের জাতির শাস্তির সংবাদ জানিয়ে বলেন, 

“তাদের প্রত্যেককেই তার অপরাধের জন্যে শাস্তি দিয়েছিলাম, তাদের কারো প্রতি প্রেরণ করেছি শিলাবৃষ্টি, তাদের কাউকে আঘাত করেছিল বিকট শব্দ, কাউকে আমরা দাবিয়ে দিয়েছিলাম ভূ-গর্ভে এবং কাউকে করেছিলাম নিমজ্জিত। আর তাদের কারো প্রতি যুলুম করেন নি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছিল।
[সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৪০]

আর আপনি যেমন আপনার চারপাশে যাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি ও তাঁর আযাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মুসিবত লক্ষ্য করছেন। 

(৭) ব্যর্থতা ও অনিবার্য ধ্বংস:

সে তার যুলুমের কারণে তার চেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ততার সম্মুখীন হয়, যার মাধ্যমে হৃদয় ও আত্মা উপকৃত হতো তাই সে হারায়। কারণ, আল্লাহর পরিচয় লাভ এবং তাঁকে ডাকার মাধ্যমে তাঁর ঘনিষ্ঠতা অর্জন ও তাঁর প্রশান্তি লাভ। সে দুনিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ সে দুনিয়াতে শোচনীয় ও দিশেহারা হয়ে জীবন-যাপন করে এবং সে তার নিজের ক্ষতি করে, যার জন্য সে সম্পদ জমা করে। কারণ, তাকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে সে নিজেকে সেই কাজে নিয়োজিত করে না এবং দুনিয়াতে সে এর দ্বারা সুখীও হয় না। কারণ, সে হতভাগ্য হয়ে বেঁচে থাকে, হতভাগ্য হয়ে মারা যায় এবং কিয়ামত দিবসে তাকে হতভাগাদের সাথে পুনরুত্থিত করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“আর যাদের নেকীর পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে ঐ সব লোক যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করত”।
[সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৯]

সে তার পরিবারের ক্ষতি করে, কারণ সে আল্লাহর সাথে কুফুরী করা অবস্থায় তাদের সাথে বসবাস করে। সুতরাং তারাও দুঃখ ও কষ্টের ক্ষেত্রে তার সমান এবং তাদের ঠিকানা হলো জাহান্নাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“নিশ্চয় কিয়ামতের দিন ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও তাদের পরিবারবর্গের ক্ষতিসাধন করে।”
[সূরা আয-যুমার আয়াত: ১৫] 

কিয়ামত দিবসে তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে, আর তা কতইনা নিকৃষ্ট জায়গা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“(ফিরিশতাদেরকে বলা হবে) একত্রিত কর যালিম ও তাদের সহচরদেরকে এবং তাদেরকে, যাদের তারা ইবাদত করত-আল্লাহর পরিবর্তে এবং তাদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাও জাহান্নামের পথে।” [সূরা আস-সাফ্‌ফাত আয়াত: ২২-২৩] 

(৮) প্রতিপালক ও প্রভুর প্রতি অবিশ্বাস ও বিশ্বাসঘাতকতা: 

সে তার প্রতিপালকের প্রতি অবিশ্বাসী এবং তাঁর নি‘আমতের অস্বীকারকারীরূপে জীবন যাপন করে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে অস্তিত্বহীন থেকে সৃষ্টি করেন এবং তার প্রতি সকল প্রকার নি‘আমত পূর্ণ করেন। অতএব, সে কীভাবে অন্যের ইবাদত করে, আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে এবং তিনি ব্যতীত অন্যের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে …… কোন অস্বীকৃতি এর চেয়ে বেশি বড়? কোন অস্বীকৃতি এর চেয়ে বেশি নিকৃষ্ট? আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“কীভাবে তোমরা আল্লাহর সাথে কুফুরী করছ অথচ তোমরা ছিলে মৃত? অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জীবিত করেছেন। এরপর তিনি তোমাদেরকে মৃত্যু দিবেন অতঃপর জীবিত করবেন। এরপর তারই নিকট তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তিনিই যমীনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তারপর আসমান সৃষ্টির ইচ্ছা করলেন এবং তাকে সাত আসমানে সুবিন্যস্ত করলেন। আর সবকিছু সম্পর্কে তিনি সম্যক জ্ঞাত”।
[সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২৮-২৯]


এর চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক কে হতে পারে, যে তার প্রভু ও স্রষ্টাকে অস্বীকার করে? যে তার রিযিকদাতাকে অস্বীকার করে এবং জীবন ও মরণের মালিক যে তাকে অস্বীকার করে?। 

(৯) সে প্রকৃত জীবন থেকে বঞ্চিত হয়:

কারণ, পার্থিব জীবনের যোগ্য মানুষ তো সেই, যে তার প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার উদ্দেশ্যকে জানতে পারে, তার গন্তব্য তার জন্য স্পষ্ট এবং সে তার পুনরুত্থানকে বিশ্বাস করে। অতএব, সে প্রত্যেক হকদারের হক সম্পর্কে অবহিত, কোনো হককেই সে অবজ্ঞা করে না এবং কোনো সৃষ্টিজীবকে কষ্ট দেয় না। ফলে সে সুখীদের মতো জীবন-যাপন করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সুন্দর জীবন লাভ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“মুমিন হয়ে পুরুষ অথবা নারীর মধ্যে যে কেউ সৎ কর্ম করবে, আমরা তাকে অবশ্যই আনন্দময় জীবন দান করব”।
[সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭]

আর আখেরাতে রয়েছে,

“স্থায়ী জান্নাতের (আদন নামক জান্নাতের) উত্তম বাসগৃহ। এটাই মহা সাফল্য”।
[সূরা আস-সফ, আয়াত: ১২]

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এই পার্থিব জীবনে চতুষ্পদ জানোয়ারের মতো জীবন-যাপন করে; অতএব সে তার প্রতিপালককে চেনে না এবং সে জানে না যে তার উদ্দেশ্য কী এবং এও জানে না যে, তার গন্তব্যস্থল কোথায়? বরং তার উদ্দেশ্য হলো খাবে, পান করবে এবং ঘুমাবে। তাহলে তার মাঝে এবং সমস্ত জীব-জানোয়ারের মাঝে কি পার্থক্য? বরং সে তাদের চেয়ে বেশি বড় বিপথগামী।

মহান আল্লাহ বলেন: 

“আর অবশ্যই আমরা বহু জিন্ন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি, তাদের হৃদয় রয়েছে; কিন্তু তারা তা দ্বারা উপলদ্ধি করে না, তাদের চক্ষু রয়েছে; কিন্তু তারা তা দ্বারা দেখে না, তাদের কর্ণ রয়েছে; কিন্তু তা দ্বারা তারা শোনে না, তারাই হলো পশুর ন্যায়; বরং তা অপেক্ষাও অধিক বিভ্রান্ত, তারাই হলো গাফেল বা অমনোযোগী।”                                   

[সূরা আল-আ‘রাফ আয়াত: ১৭৯] 

তিনি আরও বলেন,

“আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে ও বোঝে? তারা তো পশুর মতো বরং তারা আরও বেশি পথভ্রষ্ট।”
[সূরা আল-ফুরক্বান, আয়াত: ৪৪] 

(১০) সে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে:

কারণ, কাফের এক শাস্তি থেকে আরেক শাস্তিতে স্থানান্তর হয়। তাই সে দুনিয়া থেকে বের হওয়া থেকে আরম্ভ করে আখেরাত পর্যন্ত এর বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রণা ও বিপদ ভোগ করতে থাকে। এর প্রথম পর্যায়ে সে যে শাস্তির উপযুক্ত তা প্রদান করতে তার নিকট মালাকুল মাউত বা মৃত্যুর ফিরিশতা আগমন করার আগেই শাস্তির ফিরিশতা আগমন করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“(হে রাসূল) আর আপনি যদি (ঐ অবস্থা) দেখতে পেতেন, যখন ফিরিশতাগণ কাফেরদের রূহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।”
[সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৫০] 

তারপর যখন তার রূহ বের হয় এবং তার কবরে অবতরণ করে তখন সে এর চেয়ে বেশি কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হয়। আল্লাহ তা‘আলা ফির‘আউনের বংশধরের সংবাদ দিয়ে বলেন, 

“সকাল-সন্ধায় তাদেরকে উপস্থিত করা হয় আগুনের সম্মুখে, আর যেদিন কিয়ামত ঘটবে সেদিন বলা হবে ফেরআউন সম্প্রদায়কে নিক্ষেপ কর কঠিন শাস্তিতে।”
[সূরা গাফির, আয়াত: ৪৬] 

তারপর যখন কিয়ামত হবে, সকল সৃষ্টিকুলকে পুনরুত্থিত করা হবে, মানুষের আমলসমূহ তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে, তখন কাফেররা দেখবে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের যাবতীয় আমলকে সেই কিতাবের মধ্যে লেখে রেখেছেন, যার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

“আর সেদিন উপস্থিত করা হবে আমলনামা এবং তাতে যা লিপিবদ্ধ আছে তার কারণে আপনি অপরাধীদের দেখবেন আতংকগ্রস্ত, আর তারা বলবে! হায়, আমাদের আফসোস! এটা কেমন গ্রন্থ! এটা তো ছোট-বড় কোনো কিছুই বাদ দেয় নি বরং সমস্ত কিছু হিসাব (লিপিবদ্ধ করে) রেখেছে; তারা তাদের কৃতকর্ম সম্মুখেই উপস্থিত পাবে; আর আপনার প্রতিপালক কারো প্রতি যুলুম করেন না।” [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৪৯] 

সেখানে কাফের কামনা করবে যে, যদি সে যদি মাটি হয়ে যেত:

কিয়ামতের দিন যখন কাফেররা দেখতে পাবে তাদের পরিণতি তখন তারা কামনা করবে যদি তারা মাটি হয়ে যেত। 

“সেদিন মানুষ তার নিজ হাতের অর্জিত কৃতকর্মকে দেখবে আর কাফের বলতে থাকবে: হায়! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম!”
[সূরা আন-নাবা, আয়াত: ৪০] 

কিয়ামত দিবসের সেই অবস্থার তীব্র আতঙ্কের কারণে, মানুষ যদি পৃথিবীর সব কিছুর মালিক হতো, তাহলে অবশ্যই তারা সেই দিনের আযাব থেকে বাঁচার জন্য তা মুক্তিপণ দিতো। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“যারা যুলুম করেছে তাদের কাছে যদি সমস্ত পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ এবং তার সাথে সমপরিমাণ আরো সম্পদ থাকে, তবুও কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য মুক্তিপণস্বরূপ সকল কিছু তারা দিয়ে দিতে প্রস্তুত হবে।”
[সূরা আয-যুমার আয়াত: ৪৭] 

মহান আল্লাহ আরও বলেন,

“তাদেরকে করা হবে একে অপরের দৃষ্টিগোচর। অপরাধী সেই দিনের শাস্তির বদলে দিতে চাবে আপন সন্তানকে। তার স্ত্রী ও ভাইকে। তার আত্মীয়-স্বজনকে, যারা তাকে আশ্রয় দিতো এবং পৃথিবীর সকলকে, যাতে এই মুক্তিপণ তাকে মুক্তি দেয়।”

[সূরা আল-মা‘আরিজ, আয়াত: ১১–১৪] 

কারণ, সেই জায়গা (নিবাস) তো হলো প্রতিদানের জায়গা, তা কোনো আশা-আকাংক্ষার জায়গা নয়। সুতরাং মানুষ তার কর্মের প্রতিফল অবশ্যই পাবে; দুনিয়ায় যদি তার কর্ম ভালো হয়, তবে তার প্রতিদানও ভালো হবে। আর দুনিয়ায় যদি তার কর্ম মন্দ হয়, তবে তার প্রতিদানও হবে মন্দ। আর আখেরাতের আবাসস্থলে কাফের যে মন্দ জিনিস পাবে তা হলো জাহান্নামের শাস্তি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার শাস্তি প্রদান করবেন, যাতে করে তারা তাদের মন্দ কর্মের কঠিন শাস্তি ভোগ করে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“এটা সেই জাহান্নাম, যা অপরাধীরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। তারা জাহান্নামের অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করবে।”
[সূরা আর-রহমান, আয়াত: ৪৩-৪৪] 

আর তিনি তাদের পানীয় এবং পোষাক পরিচ্ছদ সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে বলেন, 

“সুতরাং যারা কুফুরী করে তাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আগুনের পোষাক, তাদের মাথার উপর ঢেলে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি। যা দ্বারা, তাদের পেটে যা রয়েছে তা এবং তাদের চামড়া বিগলিত করা হবে। আর তাদের জন্য থাকবে লোহার হাতুড়িসমূহ।”
[সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ১৯-২১]

শেয়ার করুন:

সাম্প্রতিক ব্লগ

ট্যাগ

অশ্লীলতা6 আকিদাহ বিষয়ক প্রশ্নোত্তর2 আখলাক1 আনুগত্য1 আমল31 আমল কবুলের শর্ত1 আসমা ওয়াস সিফাত11 ইবনে তাইমিয়াহ রহি.17 ইবনে তায়্যিমিয়া রহি.1 ইমাম আহমাদ ইবনে হামবাল রহি.3 ইশকে রাসুল স.3 ঈমান17 ঈমাম শাফিঈ রহি.1 উলামাকথন18 উসুলুস সুন্নাহ1 কবর1 কিয়ামত1 কুফর1 ক্বুরআন10 গাইরত2 জান্নাত2 জাহান্নাম2 জুমু'আ5 তাওহীদ14 তাফসীর4 দরসগাহ ম্যাগাজিন ২6 দাম্পত্য1 নারীবাদ1 পুঁজিবাদ1 প্রবন্ধ4 বদর1 বারাকাহ1 বাংলায় মুসলিম শাসনের ইতিহাস0 বিচার ফয়সালা5 বিজ্ঞানবাদ1 বিবিধ প্রশ্নোত্তর1 বিশুদ্ধ তাওবাহ3 বিশ্বকাপ1 মাজমুঊল ফাতওয়া2 মানহাজ1 ম্যাগাজিন1 যাকাত1 রমাদান1 রামাদান হাদিস2 রোযা2 শয়তানের চক্রান্ত1 শাইখ আহমাদ মুসা জীবরিল হাফি.1 শাইখ উসাইমিন রহি.1 শায়েস্তা খান0 শাস্তি1 শিরক1 সমকামীতা1 সাওম3 সাম্প্রদায়িকতা1 সালাত1 সাহাবী1 সিয়াম2 সিরাত1 সূরা আন নাবা1 সূরা আল আনককবুত1 সূরা আল হাজ্জ1 সূরা মাউন1 সূরা হূদ1 হত্যা1 হদ1 হাদিসে কুদসী3 হামজা জর্জিস1 হাশর1

সাবস্ক্রাইব করুন