তাফসিরে সুরা মাউন (১)
শায়খ আহমদ মুসা জিবরিল হাফিজাহুল্লাহ
ধরুন, আপনি আপনার পাশের বাড়ির প্রতিবেশী একটি হাতুড়ি দিয়েছেন যার এটি প্রয়োজন। এটাই মাউনের উদাহরণ।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إنما بعثت لأتمم مكارم الأخلاق
‘আমাকে উত্তম চরিত্র শেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছে।’
বর্তমান সময়ে লোকজন আকিদার দিক গ্রহণ করে। কিন্তু তারা উত্তম আচার-ব্যবহার ত্যাগ করে। বিপরীত দিকে কিছু লোক আকিদায় অজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। কিন্তু তারা আপনাকে এসে
বলবে, ‘ওহ, খুব সুন্দর! ভাই, তিনি খুব সুন্দর এবং এটি তার হৃদয় দিয়ে লিখেছেন এবং তিনি তাই…’ উভয়টিই সমস্যা। এটা একটা ঘাটতি। এটা একটা রোগ যে, আপনি ‘আকিদা গ্রহণ করেন, অথচ আপনি আদব ত্যাগ করেন বা আপনি উত্তম আচার গ্রহণ করেন, কিন্তু আপনি আকিদা ত্যাগ করেন।
আমরা যদি কুরআনের দিকে লক্ষ করি, তবে সর্বদা আকিদার পাশাপাশি আচার-আচরণের দিকও দেখতে পাব।
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ
‘নামাজিরা ধ্বংস হোক!’
এটা ‘ইবাদাত, আকিদা, ইমানের ব্যাপারে বলা হচ্ছে। হায় হায়! যারা নামাজ পড়ে তাদের জন্য ধিক। তারা কে? পরের আয়াত দেখুন,
الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ
‘যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন। যারা লোক দেখায়। যারা ‘মাউন’ থেকে বিরত থাকে।’
ويمنعون الماعون এটি কুরআনে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আদব এবং আকিদা পাশাপাশি এসেছে।
আয়াতে উল্লিখিত আল-মা-উন কী?
ইবনু আব্বাস রাযি. বলেন, আচার-আচরণ। আল্লাহ এখানে নামাজের কথা বলছিলেন, এর সাথে আল মাউনের কি সম্পর্ক? কারণ, ইমান, আকিদা এবং আচার-আচরণ পাশাপাশি অবস্থান করে।
الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ
এটি সেই আয়াত যেখানে আল্লাহ প্রদর্শনের কথা বলেছেন। প্রদর্শন করা বা রিয়া একটি মানসিক অসুস্থতা। এই রোগের রোগী বলতে তাদের বোঝায়, যারা ভাল কাজ করে যাতে লোকেরা তাদের ভাল মনে করে এবং প্রচার করে যে, তারা ভাল মানুষ [যা বেশিরভাগ সময় লোক দেখানোর উদ্দেশ্য হয়ে থাকে]।
মনে রাখবেন, লোক দেখানো রোগ ভয়াবহ। এটা একটা মানুষের সব আমল বরবাদ করে দিতে পারে। মনে রাখবেন, এই অসুস্থতা হৃদয়ের উপর প্রভাব ফেলে এবং এমনকি এটি আপনাকে ধ্বংসও করতে পারে। প্রদর্শন করা কতটা বিপজ্জনক বলার বাকী নেই। আর আল্লাহই ভালো জানেন।
অনুবাদঃ উস্তাদ আম্মারুল হক
টিকাঃ (১) মাউন শব্দটি পুংলিঙ্গ বিশেষ্য, দৈনন্দিন জীবনে ছোট এবং দরকারী বলে বিবেচিত কিছুকে আরবিতে মাউন বলে।