যখন একজন আর মু’মিন থাকে না…

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

যিনাকার যখন যিনায় লিপ্ত হয় তখন সে মু’মিন থাকে না। কেউ যখন মদপান করে তখন সে মু’মিন থাকে না। যে চুরি করে চুরি করার সময় মু’মিন থাকে না এবং কোন ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, মানুষ তার দিকে অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকে; তখন সে মু’মিন থাকে না।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৭৭২

ফুটনোটঃ
শাস্তি বা দন্ডবিধি কার্যকর করবে প্রশাসন। যে কেউ যখন তখন যেখানে ইচ্ছা এই বিধান কার্যকর করলে একটি দেশের প্রশাসনিক অবকাঠামোই শুধু নষ্ট হবে না বরং সুষ্ঠু সমাজের সার্বিক সুখ ও শান্তি হুমকির সম্মুখীন হবে। ফলে হদ্দ বা শাস্তির মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য ব্যহত হবে। কারণ অপরাধীকে শাস্তি দেয়া হলে অন্যরা এ থেকে শিক্ষা নেবে এবং অপরাধ সমূলে উৎপাটন হবে। অবশেষে শাস্তির মূল উদ্দেশ্য শান্তি, শৃখংলা ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হবে।

ইমাম নববী বলেন, এই হাদীসের তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। তাঁর এই কথার সূত্র ধরে মতভেদগুলো একত্রিত করলে প্রায় ১৩টি মত পাওয়া যায়। কিন্তু মজার কথা হল, মতামত ১৩টি হলেও সবগুলো মতই একটি আরেকটির দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং উপসংহারে যার অর্থ দাঁড়ায় : (১) হাদীসে উল্লেখিত গুনাহগুলোতে লিপ্ত থাকার সময় তা সম্পাদনকারীর ঈমান থাকে না। অতঃপর যখন সে এসব গুনাহের কাজ ছেড়ে দেয় হয় তখন আবার ঈমান ফিরে আসে। অর্থাৎ গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকার সময় ঈমানহীন হয়ে পড়ে। এটিই হাদীসের প্রকাশ্য অর্থ। এর প্রমাণ ইমাম বুখারী كتاب المحاربين এর অন্তর্গত باب إثم الزنا তে আব্দুল্লাহ বিন আববাস বর্ণনা করেন। আর তা হল, قال عكرمة قلت لابن عباس كيف ينزع منه الإيمان قال هكذا وشبك بين أصابعه অনুরূপ হাদীস ইমাম আবু দাঊদ এবং ইমাম হাকেম সহীহ সূত্রে মারফূভাবে সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি শুনেছেন আবূ হুরায়রার (রাঃ) নিকট এবং আবু হুরায়রা রাসূল (সাঃ) কে বলেতে শুনেছেন : إذا زنى الرجل خرج منه الإيمان فكان عليه كالظلة فإذا أقلع رجع إليه الإيمان

এবং ইমাম হাকিম ইবনু হুজায়ফার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রাকে বলতে শুনেছেন :

من زنى أو شرب الخمر نزع الله منه الأيمان كما يخلع الإنسان القميص من رأسه

উল্লেখিত গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকার সময় পূর্ণ ঈমান থাকে না। অর্থ্যাৎ পূর্ণ ঈমানদারগণ এ গুনাহগুলো করে না।

এখানে ঈমানের পূর্ণতা নিষেধ করা হয়েছে। যেমন কারো একথা বলা যে, لا علم إلا ما نفع এ ব্যাখ্যার সপক্ষে যে প্রমাণ পেশ করা হয় তা হলো,

(ক) আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস : من قال لا إله إلا الله دخل الجنة وإن زنى وإن سرق

(খ) উবাদাহ (রাঃ) এর সুপ্রসিদ্ধ সহীহ হাদীস : أنهم بايعوا رسول الله صلى الله عليه وسلم على أن لا يسرقوا ولا يزنوا

(ফাতহুল বারী)

শেয়ার করুন:

সাম্প্রতিক ব্লগ

ট্যাগ

অশ্লীলতা6 আকিদাহ বিষয়ক প্রশ্নোত্তর2 আখলাক1 আনুগত্য1 আমল31 আমল কবুলের শর্ত1 আসমা ওয়াস সিফাত11 ইবনে তাইমিয়াহ রহি.17 ইবনে তায়্যিমিয়া রহি.1 ইমাম আহমাদ ইবনে হামবাল রহি.3 ইশকে রাসুল স.3 ঈমান17 ঈমাম শাফিঈ রহি.1 উলামাকথন18 উসুলুস সুন্নাহ1 কবর1 কিয়ামত1 কুফর1 ক্বুরআন10 গাইরত2 জান্নাত2 জাহান্নাম2 জুমু'আ5 তাওহীদ14 তাফসীর4 দরসগাহ ম্যাগাজিন ২6 দাম্পত্য1 নারীবাদ1 পুঁজিবাদ1 প্রবন্ধ4 বদর1 বারাকাহ1 বাংলায় মুসলিম শাসনের ইতিহাস0 বিচার ফয়সালা5 বিজ্ঞানবাদ1 বিবিধ প্রশ্নোত্তর1 বিশুদ্ধ তাওবাহ3 বিশ্বকাপ1 মাজমুঊল ফাতওয়া2 মানহাজ1 ম্যাগাজিন1 যাকাত1 রমাদান1 রামাদান হাদিস2 রোযা2 শয়তানের চক্রান্ত1 শাইখ আহমাদ মুসা জীবরিল হাফি.1 শাইখ উসাইমিন রহি.1 শায়েস্তা খান0 শাস্তি1 শিরক1 সমকামীতা1 সাওম3 সাম্প্রদায়িকতা1 সালাত1 সাহাবী1 সিয়াম2 সিরাত1 সূরা আন নাবা1 সূরা আল আনককবুত1 সূরা আল হাজ্জ1 সূরা মাউন1 সূরা হূদ1 হত্যা1 হদ1 হাদিসে কুদসী3 হামজা জর্জিস1 হাশর1

সাবস্ক্রাইব করুন