শোনো বোন, তোমার পিতাকে, তোমার ভাইকে, তোমার স্বামীকে দাইয়ুস বানিয়ো না।
বাবা দিবসে বাবা কে ভালোবেসে কত্ত বড় পোস্ট দাও তুমি, ছবি দিয়ে ভাসিয়ে দাও ফেসবুক, বাবার জন্য তুমি নাকি সব করতে রাজি।
কিন্তু তুমি তোমার বাবাকে জাহান্নামে পাঠানোর জন্য আজ উঠে পড়ে লেগেছো।
তুমি তোমার ভাইকে ভালোবেসে নিজের চকলেট টুকুও দিয়ে দাও। কিন্তু তুমি তাকে কিয়ামতের দিন, শেষ বিচারের ময়দানে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছো।
আর যেই স্বামীর সন্তান তোমাকে মা বলে ডাকে, সেই স্বামীকে তুমি জান্নাত থেকে বঞ্চিত করতে আজ একাই যথেষ্ট!
কিভাবে?
তুমি আজকে পর্দা বাদ দিয়ে জাহেলিয়াত যুগের মহিলাদের মতন বেগানা হয়ে বেহায়া নির্লজ্জের মতন বের হচ্ছো। আল্লাহ তোমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সাজ সজ্জা প্রদর্শন করে বাইরে বের না হতে, কিন্তু তুমি মাঞ্জা মেরে মেকআপ দিয়ে নিজের রূপ লাবণ্যকে সবার সামনে দেখিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিলে। ফেসবুক ইন্সটাগ্রামে তোমার রূপের আগুনে দগ্ধ হাজার হাজার ফ্যান ফলোয়ার। আর জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তোমার বাবা, ভাই, স্বামী।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দাইয়ুস কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (নাসায়ীঃ ২৫৬২, মিশকাতঃ ৩৬৫৫)
আর হে পুরুষেরা,নিজে দাইয়ুস হয়ে নিজেদেরকে পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা করে না? নিজের স্ত্রীকে যখন আরেক পুরুষ তার চোখ দিয়ে দেখে তখন তোমার আত্নসম্মানে লাগে না? নিজের মেয়েকে যখন হাতাকাটা জামা পড়ে সেজেগুজে রাস্তায় বের হতে দেখো আর ছেলেরা হা করে তোমার মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে তোমার লজ্জা হয় না? নিজেকে পুরুষ বলে পরিচয় দিও না।
‘যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’ (সূরা নুর, আয়াতঃ ১৯)
প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির জন্যে আল্লাহ তাআলা জান্নাত হারাম করেছেন- নেশাদার দ্রব্যে আসক্ত ব্যক্তি, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, এবং দাইয়ুস। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ৫৮৩৯)
দাইয়ুস সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয় যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও কুকর্মকে মেনে নেয়।’ (মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ)
অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের অধিনস্ত অন্য সদস্যদের বেপর্দা চলাফেরা ও অশ্লীল কাজকর্ম বা ব্যভিচারকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে অথবা কোনোরূপ বাধা না দিয়ে মৌনতা অবলম্বন করে।
ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেছেন, ‘দাইয়ূস’ সে ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর ফাহেশা কাজ সম্পর্কে অবগত। কিন্তু তার প্রতি ভালোবাসার কারণে এ ব্যাপারে সে উদাসীন থাকে। অথবা তার উপর তার স্ত্রীর বৃহৎ ঋণ বা মোহরানার ভয়ে কিংবা ছোট ছেলেমেয়েদের কারণে সে স্ত্রীকে কিছুই বলে না এবং যার আত্ম-সম্মানবোধ বলতে কিছুই নেই’। (যাহাবী, কিতাবুল কাবায়ের- ১/৫০)