মুসলিমদের মধ্যে ‘উদারতাবাদ’ কে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বকাপকে ব্যবহার করা হচ্ছে….
~ তানভীর হায়দার
আগামী ২০শে নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত কাতার দেশটি ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হবে।
আধুনিক যুগে খেলাধুলাকে যেভাবে জাঁকজমকপূর্ণ হিসেবে প্রচার করা হয়, সেভাবে খেলাধুলায় ঘটা অনৈতিকতা এবং আধ্যাত্মিকহীনতার মত কর্মকাণ্ড গুলোকে প্রচার করা হয়না। মুসলমানদের জন্য পুঁজিবাদী খেলাধুলা কিছুই নয় বরং এগুলো বিপর্যয় ও ধ্বংসলীলা বয়ে আনে।
কাতারকে যখন বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তখন থেকেই এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে এই অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলেও কাতার দেশটি তার হোস্টিং অধিকার হারায়নি। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তন, পশ্চিমাদের বানানো মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং চিন্তার দিক থেকে আধুনিক না হওয়ার (অর্থাৎ সাদা চামড়াদের তুলনায় সে দেশের জনগণ কম প্রগতিশীল) কারণে কাতার দেশটির উপর আরও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু কাতার সেসব অভিযোগ মোকাবিলা করে। দেশটির হর্তাকর্তারা বিশ্বকে তাদের বিগ লেবেলের ”ফরওয়ার্ড থিংকিং” (উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের পক্ষে; প্রগতিশীল) এবং তারা যে পশ্চিমা মতবাদের প্রতি সহনশীল তা দেখিয়েছে। বিশ্বকাপের স্বার্থে দেশটি খেলাধুলাকেন্দ্রীক নানারকম পাপ কাজকেও মেনে নেবে বলে জানিয়েছে।
সম্প্রতি কাতার বিশ্বকাপের প্রধান স্কাই নিউজকে বলেছে:
১. সমকামী ভক্তদেরকে স্বাগত জানানো হবে। এমনকি তারা স্টেডিয়ামে অন্যান্যদের মাঝে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি রংধনু পতাকা প্রদর্শন করতে পারবে।
২. ফুটবল টিমগুলোর মধ্যকার “পলিটিক্যাল মেসেজ” এর বিরুদ্ধে সতর্ক করার সময় ফিফাকে “ওয়ান লাভ” নামক বাহুবন্ধনী (কথিত সমকামীদের অধিকার সহ পশ্চিমের ডিজাইন করা মানবাধিকারের রক্ষাকবচ) পরা অধিনায়কদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
৩. মাতাল সমর্থকদেরকে সংযমী করার জন্য একটি আলাদা এলাকা তৈরি করে তাদেরকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
অর্থাৎ কাতার বিশ্বকাপে মদপানকারী ভক্ত ও সমকামী ভক্তরা বেশ সুযোগ-সুবিধা পাবে। এমনকি পশ্চিমারা মুসলমানদের ভূমিতে ইসলামবিরোধী আদর্শকে এই বিশ্বকাপের মাধ্যমে প্রচার করার সুযোগ পাবে।
মুসলিম দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটার মানে হল– একজন সাধারণ মুসলমানের ঈমান ও তার ফিতরাতকে আঘাত করা। বিশ্বকাপ প্রধানের বক্তব্য থেকে বুঝা যায়– কাতার নামক মুসলমি দেশটি যেন প্রগতিশীল হয়ে যাচ্ছে। তারা যেন বলছে, “আচ্ছা, বিশ্বকাপের মাধ্যমে আমরা মদপানকারী ও সমকামীদের অধিকারের পক্ষাবলম্বন করছি। ওকে?”
সত্যিকার অর্থে, মুসলমানদের মধ্যে উন্নতির জন্য নয় বরং মন্দ কাজে মুসলমানদেরকে আলিঙ্গন করানোর জন্যই খেলাধুলাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কাতারের এসব কর্মকান্ডে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, কাতার এবং অন্যান্য মুসলমানরা আধুনিকতাকে আলিঙ্গন করার জন্য ধ্বংসের দিকে ঝুঁকতে ইচ্ছুক, এরা আত্মসম্মান ও গায়রতের প্রতিটি কণাকে একপাশে ফেলে রেখে আধুনিকতার বুলি আউড়াতে চায়।
সবশেষে ভাবুন তো, কিভাবে নিছক একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করা মুসলমানদের সাহায্য করে, যাদের কি না মৌলিক অধিকারই সর্বদা পদদলিত হচ্ছে? আর থাক উচ্চমার্গীয় মানবাধিকার……. বুঝতে পারছেন তো? পশ্চিমারা মূলত মানবাধিকারের নামে তাদের মতবাদকে প্রচার করে আমাদের ঈমান ধ্বংস করতে চায়…..