ইমাম আব্দুল ওয়াহহাব আশ শা’রানী রহ. বলেন,
‘আমাদের নেককার সালাফদের আরও একটি আদব ছিল যে, তারা আযান শোনা মাত্র কোন কাজে আর মনোনিবেশ করতেন না। মূলত এমনটি তারা আল্লাহর সাথে আদব প্রকাশে করতেন।
কতিপয় নেককারদের থেকে বর্ণিত আছে যে, অশ্লীল কাজে নিয়োজিত কোন এক বাজারে মহিলাকে স্বপ্নে ভাল অবস্থায় দেখা গেল! তো তাকে জিজ্ঞেস করা হলঃ কিভাবে এই ভাল অবস্থা হল তোমার?
উত্তরে সেই মহিলা বললঃ একবার মুয়াজ্জিন আযান দিচ্ছিলেন, এমতাবস্থায় আমরা এমন এক অশোভনীয় হালতে ছিলাম যখন উচ্চস্বরে আওয়াজ করা উচিৎ নয়। সুতরাং আমি আমার সঙ্গীকে মুয়াজ্জিনের আযান শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকার নির্দেশ দিলাম। আযানের সাথে এই আদব প্রদর্শনের ওসীলায় আল্লাহ তা’আলা আমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন।’
ومن آدابهم: لا يشتغلون حال الأذان بشيء أدباً مع الله تعالى. وقد حكى بعضهم عن امرأة من الباغيات أنها رئيت في هيئة حسنة لما توفيت فقيل لها: كيف ذلك؟ أذن المؤذن مرة وكنا فيما لا ينبغي من رفع الصوت فأمرت رفقتي بالسكوت حتى فرغ المؤذن فغفر الله لنا بذلك.
[আল আনওয়ার ফী আদাবিস সুহবাতি ইনদাল আখইয়ার, শারানী পৃ. ১৫২]
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম।
আযান শুনলে কি করণীয় এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যখন তোমরা মুয়াজ্জিনের আযান শুনবে তখন তিনি যা যা বলেন তোমরাও তাই বল।’
إِذَا سَمِعْتُمْ الْمُؤَذِّنَ ، فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ
[সহীহ মুসলিম: ৩৮৪]
ইমাম কাসানী আল হানাফী রহ. বলেন,
‘আযান ও ইকামাত অবস্থায় শ্রোতাদের কথা বলা, কুরআন তিলাওয়াতে ন্যস্ত থাকা অথবা আযানের জবাব দেওয়া ছাড়া অন্য যেকোনো কাজে মশগুল থাকা উচিৎ ও শোভনীয় নয়। যদি কেউ কুরআন তিলাওয়াত অবস্থায় আযান শুনে তাহলে তৎক্ষনাৎ সে তা থামিয়ে আযান মনযোগ দিয়ে শুনবে এবং আযানের জবাব দিবে যেমনটি ফুকাহায়ে কেরাম তাদের ফতোয়ার কিতাবে বলেছেন। আল্লাহই ভাল জানেন।’
ولا ينبغي أن يتكلم السامع في حال الأذان والإقامة ولا يشتغل بقراءة القرآن ولا بشئ من الاعمال سوى الإجابة ولو كان في القراءة ينبغي أن يقطع ويشتغل بالاستماع والإجابة كذا قالوا في الفتاوى والله أعلم.
[বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫৫]
ইমাম নববী আশ শাফেয়ী রহ. বলেন,
‘মুয়াজ্জিনের আযান শুনলে কুরআন তিলাওয়াত ওখানেই থামিয়ে দিবে এবং আযান ও ইকামাতের বাক্যের কুরআন সুন্নাহ মুতাবেক জবাব দিবে। এরপর তা শেষ হলে আবার কুরআন তিলাওয়াত শুরু করে দিবে। আর এবিষয়ে আমাদের শাফেয়ী ফুকাহারা একমত।’
” ولو سمع المؤذن قطع القراءة وأجابه بمتابعته في ألفاظ الأذان والإقامة ثم يعود إلى قراءته وهذا متفق عليه عند أصحابنا ”
[আত তিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন, নববী পৃ.১২৬]
ইমাম আবু হামেদ আল গাযালী আশা শাফেয়ী রহ. বলেন,
‘যখন তুমি আযান শুনবে ঐ অবস্থায় তুমি যেই কাজেই থাকোনা কেন তা থামিয়ে দিয়ে মুয়াজ্জিনের আযানের জবাব দিতে মশগুল হবে।’
فإذا سمعت الأذان في أثناء ذلك فاقطع ما أنت فيه واشتغل بجواب المؤذن.
[বিদায়াতুল হিদায়াহ, গাযালী পৃ.৩৬]